Global Sylhet24
প্রকাশ : May 11, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

বিলীন হচ্ছে সুরমার ভাঙনে দোয়ারাবাজারের মাছিমপুর গ্রাম

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরের পশ্চিম মাছিমপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব মোজাহিদ মিয়া বলেন, দেখতে দেখতে চোখের সামনেই সুরমার পেটে চলে গেলো নিজ বসতভিটা, ফসলি জমি ও গাছপালা। নদী ভাঙনের কবলে তিনবার বসতঘর স্থানান্তর করেছি। পৈতৃক বাড়ি, জমিজমাসহ সবকিছু হারিয়ে আজ মাথাগোঁজার ঠাঁইটুকু নিয়ে বড়ই দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। কখন জানি ওই একটুখানি বসতভিটেও গ্রাস করে সুরমার ভাঙন।


মোজাহিদ মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, শুধু তাই নয় ‘আমাদের পরিবারের তিন প্রজন্মের জমিজমা, বসতবাড়ি ওই করালগ্রাসী সুরমা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের আর কোনো জমি নেই।


একই গ্রামের সত্তরোর্ধ দুলাল মিয়া বলেন, নদী ভাঙনের কবলে পড়ে মোজাহিদ মিয়ার মতো তিনিও তিনবার বসতঘর স্থানান্তর করেছেন।

 

তিনি বলেন, ‘নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি জমিজমা হারিয়ে প্রায় দু'শ পরিবার উদ্বাস্তু হয়েছে। সর্বস্ব হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে এখন কেউ সরকারে আশ্রয়ন প্রকল্পে, কেউ অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেকে যাযাবরের মতো ঘুরপাক খাচ্ছেন।’

শুধু মোজাহিদ আর দুলাল মিয়াই নয়, সুরমার ভাঙনে উপজেলার মাছিমপুরের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দারা প্রতিনিয়তই এখন ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।


স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ভাঙনের কারণে প্রতি বছরই গ্রামের অন্তত দুই থেকে ৫টি পরিবার বসতঘর স্থানান্তর করছেন। ভাঙতে ভাঙতে গ্রামের অর্ধেকটাই বিলীন হয়ে গেছে এখন।

স্থানীয়রা জানান, এ ভাঙন সমস্যা নতুন নয়। কয়েক যুগ ধরেই অব্যাহত ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। গত এক দশক ধরে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ওই সময়ে স্থানীয় এমপিসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে বারবার যোগাযোগ করলেও শুধুমাত্র দায়সারা আশ্বাস ছাড়া কিছুই নয়। ভাঙন প্রতিরোধে এখনি দ্রুত কোনো উদ্যোগ না নিলে পুরো গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। ফলে উদ্বাস্তু হয়ে পড়বে আরও শতাধিক পরিবার।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দোয়ারাবাজার শাখার আহ্বায়ক ও স্থানীয় বাসিন্দা এসার মিয়া বলেন, ‘বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে দোয়ারাবাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শত কোটি টাকার নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। অথচ সর্বাধিক ভাঙন কবলিত পশ্চিম ও পূর্ব মাছিমপুর গ্রামকে ওই প্রকল্পের আওতায় নেওয়া হয়নি শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে। বর্তমানে ভাঙন প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভাঙন রোধে দ্রুতল পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই।’


স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মিজু বলেন, ‘ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে একাধিকবার লিখিত আবেদন করেছি। কিন্তু আমাদেরকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। কিন্তু আমাদেরকে বাদ দিয়ে অন্য এলাকায় কাজ করা হয়েছে।’

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দোয়ারাবাজার পওর উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অঃ দাঃ) শমশের আলী জানান, ‘সুরমা নদীর ভাঙন কবলিত পূর্ব মাছিমপুর ও পশ্চিম মাছিমপুরের বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট রিপোর্ট প্রেরণ করা হয়েছে।’

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অগ্নিকাণ্ডের ৫ দিন পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশ

1

কাতারে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের নতুন সভাপতি শামীম সম্পাদক সালা

2

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড

3

নেতাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন খালেদা জিয়া ও তারেক

4

করোনাকালে বাড়লেও ক্রমেই কমছে স্টার্টআপে বিনিয়োগ, নীতি সহজ কর

5

‘আমি ভয়ও পাচ্ছি, কারণ ইসরায়েলিদের বিশ্বাস করি না’

6

ঘাসিটুলায় বেপরোয়া জাকিরের জুয়ার প্রতারণা পুলিশের ভূমিকা রহস্

7

অতীতের রাষ্ট্রপরিচালকেরা দুর্নীতি করে আঙুল ফুলে বটগাছ হয়েছেন

8

Orphan in Action-এর উদ্যোগে ৭ নম্বর ওয়ার্ড জালালাবাদে ২২৫ প

9

চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা, দুই দেশের সম্পর্ক পৌঁছাবে

10

বিসিসির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করল নির্বাচন কমিশন

11

বিশ্বনাথে কৃষক দলের নেতাকে কু‌পিয়ে জখম

12

আজ মহান স্বাধীনতা দিবস

13

ঠাকুরগাঁওয়ে ইত্যাদির শুটিংয়ে কী ঘটেছিল, জানালেন হানিফ সংকেত

14

বালুচর বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদ মার্কেট কমিটির উদ্যোগে

15

বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ সিলেট আঞ্চলিক প্রতিনিধিদের সম্মানে

16

সিলেটে ক্রেতাদের যে বার্তা জানাল বাটা

17

এসএসসির ১ম দিনে সিলেটে অনুপস্থিত ৮৭৮, বহিস্কার ১

18

মেহেরবানি করে চাঁদাবাজি করবেন না, রাজশাহীতে কর্মী সম্মেলনে জ

19

করোনাকালে বাড়লেও ক্রমেই কমছে স্টার্টআপে বিনিয়োগ, নীতি সহজ কর

20