সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। দায়ের করা ওই মামলায় ৫ জন সাংবাদিকসহ ১৮৪ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরোও ৩০০০ জনকে আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
জানা যায়, শুক্রবার রাতে নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও শনিবার (১৯ জুলাই) সকালে মামলা রজু করা হয়। নিহত রিমন মিয়ার ছোট ভাই রাজন আহমদ বিধু বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলায় দৈনিক মানবজমিনের নবীগঞ্জ প্রতিনিধি এম, এ বাছিত, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ছনি আহমদ চৌধুরী, দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকার সম্পাদক মো. আলা উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক সেলিম মিয়া তালুকদার, দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার জাবেদ ইকবাল তালুকদারসহ ৫ জন সাংবাদিককে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, নবীগঞ্জে দুই সাংবাদিকের বিরোধকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক পোস্টে লেখালেখির জের ধরে একে অপরকে কটুক্তি করে দোষারুপসহ বিভিন্ন পোস্ট করেন। এই পোস্টকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে এই সংঘর্ষে দুই গ্রামের মানুষ জড়িয়ে পড়লে তাদের সাথে আরো কয়েকটি গ্রামের মানুষ এসে সংঘর্ষে যোগ দেয়। এর জের ধরে গত ৭ জুলাই বেলা অনুমান সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে পূর্ব ও পশ্চিম তিমিরপুর, চরগাঁও সহ আশপাশের লোকজনদেরকে নিয়ে ১নং আসামী আলা উদ্দিনের নেতৃত্বে মিটিংএ মিলিত হয়। অপর দিকে আনমনু গ্রামের লোকজন ও একত্রে মিলিত হইয়া মিটিং করে। এদিন ২ টার সময় আসামী আলা উদ্দিনের নেতৃত্বে আনমনু গ্রামে অগ্নিসংযোগ লুটপাট, ভাঙচুর ও খুনের জখমের উদ্দেশ্যে হামলা করে অজ্ঞাতনামা প্রায় ২৫০০-৩০০০জন লোক মিছিল সহকারে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ রামদা, দা-সুলফি, টেটা, কিরিস, ডেগার, ককটেল, ইট-পাটকেল দিয়ে মারাত্মকভাবে হামলা করে অসংখ্য মানুষকে আহত করেন। এ সময় আনমনু গ্রামের প্রবেশপথে উল্লেখিত আসামীগণসহ অজ্ঞাতনামা আসামী বাজারে ভাঙচুরের তান্ডব চালান।
নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ কামরুজ্জামান বলেন, ‘রিমন হত্যার অভিযোগে রাতে রাতে ১৮৪ জনের নামোল্লেখসহ আরো ৩ হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
উল্লেখ্য, দুই সাংবাদিকের বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ৭ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলার পুর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমিরপুর, চরগাঁও ও আনমনু, নোয়াপাড়া, রাজাবাদ, রাজনগর গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। উক্ত সংঘর্ষে শতাধিক লোক আহত, ২ জন নিহত ও ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ করা হয়। এঘটনায় একটি হত্যা মামলা, একটি পুলিশ এসল্ট মামলা অপরটি হাসপাতাল ভাঙচুরের অভিযোগে নবীগঞ্জ থানায় তিনটি মামলা রের্কড করা হয়। ওই মামলাগুলোতে ১০ হাজার মানুষকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।