মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরশহরের পাখিয়ালাস্থ শ্রী শ্রী উদ্ধব ঠাকুরের আখড়ার দুইটি মন্দিরে দুঃসাহসিক চুরিসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের নেক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে রোববার বিকেলে আখড়া প্রাঙ্গণে সর্বদলীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা এই ঘটনায় জড়িত দুইজন চোরকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানোয় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্যান্য চোরদের গ্রেফতার ও লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারের জোর দাবি জানিয়েছেন।
শ্রী শ্রী উদ্ধব ঠাকুরের আখড়া পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষক মঞ্জু লাল দে’র সঞ্চালনায় ও স্থানীয় প্রবীন মুরব্বি ও সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান ফারুকের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এমাদুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান খছরু, জুড়ী টিএন খানম একাডেমি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অরুন চন্দ্র দাস, উপজেলা পেশাজীবি সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মোহাইমিন, পৌর জামায়াতের সাবেক আমীর খিজির আহমদ, যুব জামায়াতের সভাপতি মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন, সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাহেনা বেগম হাসনা, উপজেলা পূজা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট গোপাল দত্ত বাবলু, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত কুমার পাল, হরিনাম যজ্ঞ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. দীগেন্দ্র চন্দ্র নাথ, ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন চক্রবর্তী, জেলা ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক গৌরাঙ্গ দে, জুড়ী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সহকারি প্রধান শিক্ষক দিবাকর দাস, বড়লেখা উপজেলা পূজা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গীতেশ চন্দ্র দাস, সাংবাদিক কল্যাণ প্রসুন চন্দ প্রমুখ।
এদিকে মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শ্রী শ্রী কালিবাড়ি মন্দির চুরির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আমি, মৌলভীবাজার-১ আসনের জামায়াতে ইসলামি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে, বড়লেখা উপজেলার এই দুইটি ধর্মীয় উপাসনালয়ে চুরির ঘটনাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় ও ঘৃণিত হিসেবে বিবেচনা করি। ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রীতির বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের উপর সরাসরি আঘাত। যারা এই ঘৃণ্য কাজের সাথে জড়িত, তারা কেবল আইন লঙ্ঘন করেনি, বরং মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকেও চরমভাবে অপমান করেছে।
তিনিও প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান, চুরির ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক এবং মন্দির কমিটিকে যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান করা হোক।
উল্লেখ্য, ১৩ জুন শুক্রবার রাতে অজ্ঞাত চোরেরা শ্রী শ্রী উদ্ধব ঠাকুরের আখড়ার দুইটি মন্দিরের দরজার কড়া ভেঙে স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে গেছে। এঘটনায় আখড়া কমিটির সভাপতি মঞ্জু লাল দে থানায় মামলা করেন।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম সরকার জানান, অভিযোগ পেয়েই পুলিশ কয়েক দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও নানা আলামত সংগ্রহ করে। তদন্তে চুরির সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় শনিবার দুই চোরকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। চোরচক্রের অন্যদের গ্রেফতার ও মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন